Wednesday, July 26, 2017

যাত্রীর সামনেই আপত্তিজনক কাজে লিপ্ত উবার চালক, ভিডিও করলেন খোদ যাত্রীই!

সারাবিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও এখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে উবার সেবা। প্রযুক্তির কল্যাণে এক ক্লিকে ঘরের সামনে হাজির হচ্ছে গাড়ি। নিরাপদে রাত বিরাতে চলাচলের জন্য এই সুবিধার অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু যাত্রীর সামনে যদি আপত্তিজনক কাজে লিপ্ত হয় গাড়িচালক, তখন যাত্রী কতটুকু নিরাপদ?
তবে ঘটনাটি এই দেশের নয়। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে ঘটনাটি চলতি মাসের ১৭ জুলাই রাত তিনটার সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বস্টনে ঘটেছে। সেখানকার এক বাসিন্দা অ্যানের মার্টিনো শিকাগো থেকে উবার ক্যাব বুক করেছিলেন। কিন্তু যাত্রীর সামনেই উবার চালক আপত্তিজনক কাজ শুরু করে। হাজার আপত্তি সত্ত্বেও বাধ মানেনি তাদের উদ্দাম যৌনতা। বাধ্য হয়ে পুরো দৃশ্য রেকর্ড করে সামাজিক মাধ্যমে আপলোড করলেন ভুক্তভোগী যাত্রী।
যাত্রী জানান, গাড়িতে ঢুকেই এক মেয়েকে দেখতে পান যাত্রী। কিন্তু তিনি শেয়ার ক্যাব বুক করেননি, তারপরেও সৌজন্যের খাতিরেই প্রশ্নটি গাড়িচালককে করেননি। ভেবেছিলেন চালকের পরিবারের কেউ হবে হয়তো। মেয়েটি সামনের আসনেই বসায় কোনও আপত্তি জানাননি যাত্রী মার্টিনো। কিন্তু গাড়ি কিছুটা যেতেই তার সামনেই দু’জন যৌনতায় লিপ্ত হয়। তাতে আপত্তি জানান মার্টিনো। কিন্তু তা থাকেন দুজন। এভাবেই গন্তব্যে পৌঁছান যাত্রী। বিষয়টি তখনই কাস্টমার কেয়ারে জানান মার্টিনো।
এদিকে উবারের পক্ষ থেকে মাত্র সাড়ে ছয়শো ডলার ফেরত দিয়ে বিষয়টি সমঝোতা করে নিতে বলা হয়। এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও পোস্ট করেন মার্টিনো। জানা গেছে, অভিযুক্ত চালককে বরখাস্ত করা হয়েছে, আর বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

Tuesday, July 25, 2017

রাজধানীতে নারীদের নতুন আতঙ্ক: প্র্যাংক ভিডিও

সোমা (ছদ্মনাম) নামের ইডেন কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, সেদিন বান্ধবীদের নিয়ে হাতিরঝিলে গিয়েছিলাম, হঠাৎ ব্যস্ত সড়কে একটা ছেলে নিজ থেকেই ধাক্কা খেয়ে মোবাইল হাত থেকে ফেলে দেয়, এরপর থেকেই শুরু হয় তাদের উল্টা পাল্টা কথা বার্তা, এক পর্যায়ে লোকজন জড়ো হয়ে যায়, কোনো কিছু বোঝার আগেই অদ্ভুত রকমের সমস্যায় নিজের খেই হারিয়ে ফেলি, সঙ্গে বান্ধবীরা থাকায় কিছুটা তর্ক করতে পেরেছিলাম, এক পর্যায়ে ছেলেটি দাবী করে তার ২৫ হাজার টাকা দামের মোবাইলটি ঠিক করে দিতে হবে, না হলে বাসায় অভিভাবকদের জানাবে। প্রায় মিনিট দশেকের মতো বাকবিতণ্ডার পর তারা জানায় আপু আমরা প্র্যংক ভিডিও করছিলাম, ওই যে দেখুন ক্যামেরা।

ঝর্ণা (ছদ্মনাম): পরিবারের কয়েকজন মিলে আমরা বসুন্ধারা মলে শপিং করছিলাম, এক সময় আমি আর আমার ভাই চলন্ত সিঁড়ি (এস্কেলেটর) দিয়ে পাঁচ তলার দিকে যাচ্ছিলাম, পাশের চলন্ত সিঁড়ি (এস্কেলেটর) থেকে হঠাৎই একটা ছেলে কয়েক সেকেন্ডের জন্য আমার হাত ছুঁয়ে দেয়, যা ছিল সত্যিই ভীতিকর ও অসম্মানজনক। পরে আমার ভাই নীচে নেমে তাদের সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে তারা প্র্যাংকের কথা বলে।


তরুণ সমাজের মূল্যবোধের অবক্ষয়ের জন্য সামাজিক যোগাযোগ ও ভিডিও আদান প্রদানের অনলাইন মাধ্যমগুলোতে প্র্যাংক ভিডিও তৈরির নামে (হাস্যরসের মাধ্যমে) নারীদের হয়রানি করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক এবং ইউটিউবে এরকম অসংখ্য প্র্যাংক ভিডিও দেখা গেছে যেখানে ‘কৌতুকের’ নামে নারীদের হয়রানি করা হয়েছে।

মনস্তত্ত্ববিদ, সমাজ বিজ্ঞানী ও অনলাইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভিডিও তৈরির নামে এই ধরনের রুচিহীন ও অনৈতিক কার্যক্রম রোধে তরুণ সমাজকে অবশ্যই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। পুলিশ বলছে, প্র্যাংকের নামে কাউকে হয়রানি করা হলে এই ধরনের কর্মকাণ্ড অবশ্যই অপরাধের মধ্যে পড়বে। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কেন এমনভাবে প্র্যাংকের ব্যবহার করা হচ্ছে এ সম্পর্কে ভ্লগার ও অনলাইন বিশেষজ্ঞ সোলায়মান সুখন বলেন, প্র্যাংকের ব্যবহার যেভাবে হচ্ছে তা সম্পূর্ণভাবে ভুল। টেকনোলজি ও ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার ফলে আমাদের বেশকিছু তরুণেরা এমনটা করছে। বহিঃবিশ্বে প্র্যাংক সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে ব্যঙ্গ রসাত্মক কিছু করা হয়, কিন্তু আমাদের মতো নারী বা অন্য কাউকে হেয় প্রতিপন্ন বা হয়রানি করা হয় না।

ইউটিউবে গিয়ে দেখা যায় ফ্রেন্ডজ বুম (Friendz Boom), আয়নাঘর (Aynaghor), Adda Khana Productions, jony the naughty boy নামের চ্যানেল গুলোতে এই ধরনের অসংখ্য প্রাংক আপলোড করা হচ্ছে নিয়মিত। আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় প্র্যাংকের নামে মানুষকে নাজেহাল করার সংস্কৃতি স্বাভাবিক  কোন বিষয় কি না এমন প্রশ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহ এহসান হাবীবের কাছে।

তিনি  বলেন, সামাজিকভাবে দেখলে বলা যায়, এই ধরনের প্র্যাংক যারা করছেন, তারা সমাজের অসুস্থ মানুষ। তাদের দৃষ্টিভঙ্গি নেতিবাচক। ইন্টারনেটের অপব্যবহার করে তারা তাদের নোংরা মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ করছেন। এমনিতেই আমাদের সমাজে নারীরা নানা ধরনের সহিংসমূলক আচরণের শিকার হচ্ছেন। এর সঙ্গে যদি প্র্যাংকের নামে নতুন করে নির্যাতন বা উত্যক্ত করার বিষয়গুলো যোগ হয়, তাহলে এটি রীতিমতো ভয়ংকর আকার ধারণ করবে।

প্র্যাংকের মাধ্যমে ভয় পেয়ে অনেকেই উচ্চ রক্তচাপে ভুগতে পারেন বলে জানান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ঝুনু শামসুন নাহার।

তিনি বলেন, না বলে হাস্যরস বা কৌতুকের মাধ্যমে ভিডিও করা নারীর জন্য অসম্মানজনক ও মর্যাদার প্রশ্ন। যারা মনের দিক দিয়ে শক্তিশালী না তারা কিন্তু এরকম অবস্থায় উচ্চ রক্তচাপে ভুগতে পারেন, এমনটি হ্যার্ট অ্যাটাকও হতে পারে।

প্র্যাংক ভিডিও তৈরির এমন নেতিবাচক পথ থেকে তরুণ সমাজকে বের করতে হলে করণীয় কি জানতে চাইলে বিশেষজ্ঞরা নানা পরামর্শ দিয়েছেন।

ভ্লগার সোলায়মান সুখন বলেন, আমাদের আচার-আচরণে মননশীলতার পরিচয় দিতে হবে আমাদের সেলফ সেন্সর (আত্ম-সংযম) থাকতে হবে। ইউটিউবে ভাইরাল হওয়ার জন্য প্র্যাংকের আশ্রয় নেওয়ার দরকার নেই, প্র্যাংক করে কেউ গ্রেট হতে পারে না। আমাদের সমাজে যে আগ্রাসী আচরণগুলো রয়েছে সেখান থেকেই এই প্র্যাংকের আবির্ভাব। আমাদের আরো রুচিশীলতার পরিচয় দিতে হবে। সর্বোপরি এইসব ক্যালচারের বিপক্ষে প্রবীণ ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়াও যারা এসব অদ্ভুত প্র্যাংক করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।

তরুণদের মূল্যবোধ ও মানসিকতার বিকাশ ঘটানোর কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহ এহসান হাবীব। নারীর প্রতি আরো শ্রদ্ধাশীল হওয়ায় মনে করে তিনি বলেন, আমাদের সমাজে নারীকে আনন্দ-উপভোগের বিষয় হিসেবে ব্যবহার কর হয়। এগুলো কঠোরভাবে দমন করতে হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ঝুনু শামসুন নাহার বলেন: দেশের আইন-কানুন সম্পর্কেও তরুণদের জানাতে হবে। অন্যের জন্য ভালো কিছু করা শেখাতে হবে। স্কুলের সিলেবাসে এমন কিছু জিনিস যোগ করতে হবে যাতে কিশোররা হিংস্র না হয়ে অন্যের প্রতি নমনীয় ও সংবেদনশীল হতে পারে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সাইবার ক্রাইমের উপকমিশনার (ডিসি) আলিমুজ্জামান বলেন, সাধারণত কারও পূর্ব অনুমতি ছাড়া ভিডিও গ্রহণ বা প্রকাশ, অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। প্র্যাংকের মাধ্যমে কাউকে যদি শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তা করা হয় এবং ভুক্তভোগীরা যদি আমাদের কাছে অভিযোগ করে তাহলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।

Monday, July 24, 2017

ফাঁদে পড়তে না চাইলে আগেই জেনে রাখুন প্রতারকদের নিত্য-নতুন যত অভিনব কৌশল !

খুব সহজেই আপনি অথবা আপনার স্বজন কিংবা আপনার সবচেয়ে প্রিয়জন যে কেওই হতে পারেন ভয়ানক প্রতারণার শিকার! সমুহ বিপদ থেকে রক্ষা পেতে একদিকে আপনি যতই বাড়াচ্ছেন সতর্কতা প্রযুক্তির নিত্য নতুন আবিস্কারের সুবাদে পেছনের পরিচিত কৌশল ফেলে অপরাধীরা নতুন কৌশলে আপনাকে ফাঁদে ফেলতে আবারো কোমর বেধে নিচ্ছে প্রস্তুতি!
প্রিয় পাঠক, প্রযুক্তির হাত ধরে অসাধু ব্যক্তিদের খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত হবার ঘটনা নতুন কিছু নয়। একমাত্র সাবধানতা আর প্রয়োজনীয় সতর্কতাই একমাত্র পারে আমাদের অনাকাংখিত বিপদ এবং বিব্রতকর কোন পরিস্থিতি থেকে নিরাপদে রাখতে। দিনের পালাবদলে এসেছে সব কিছুর পরিবর্তন।
সময়ের কণ্ঠস্বরের পাঠকদের জন্য এমনি কিছু নয়া প্রতারণার কৌশল থেকে বাঁচতে থাকছে একটি সতর্কতামুলক ফিচার ।
প্রতারণার শিকার হচ্ছেন নাতো! সতর্ক হোন এক্ষুনি

রাতে ভালো ঘুম হয়নি । করিম সাহেবের চোখ মুখে বিরক্তি। এখনি বাসের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হবে। চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছিলেন। রিং বাজতেই ফোন রিসিভ করলেন। ফোন পেয়ে মনটা ভালো হয়ে গেল। আড়চোখে দেখলেন স্ত্রী রান্নাঘরে। একটা নম্বরে ডায়াল করলেন। নিজে খুব একটা কথা বলতে পারলেন না, ওপাশের কথা শুনলেন। মাসের শেষ, হাতে নগদ টাকা নাই। ব্যাংকে সামান্য সঞ্চয়। বেরুনোর আগে চেকবই সাথে নিলেন। মেজাজটা ফুরফুরে। লাইনে দাঁড়াতে আজ আর কষ্ট হলো না।
অফিসে চেকবইয়ে টাকার অঙ্কটা লিখলেন। পাঁচ লাখ। একটু খারাপ লাগলো। রিটায়ারমেন্টের খুব বেশী বাকী নাই। ছেলেটার অনার্স পাশ করলো। মেয়েটা এসএসসি দেবে। পাঁচ লাখ তুলে ফেললে বাকী থাকবে দুই লাখ সাতচল্লিশ হাজার। চেকে সই করে দিলেন। পাঁচ লাখ টাকা পাঠাতে হবে। তবে পুরস্কারের মূল্যও কম নয়। ২২ লাখ টাকা। একবার ভাবলেন স্ত্রীর সাথে শেয়ার করেন। কিন্তু পুরস্কারের কথা যে গোপন রাখতে হবে। বহুদিন আগে কেনা নকিয়া সেটটা হাতে নিলেন। মাস শেষে বিল দেখে গ্রামীণের সিম ব্যবহার করবেন না বলে ও ভেবেছিলেন। ভাগ্যিস ছাড়েননি। লাঞ্চ ব্রেকে বাইরে গেলেন। সরাসরি বিকাশের দোকানে। পাঁচ লাখ টাকাই পাঠালেন। ভিন্ন ভিন্ন এ্যাকাউন্টে। প্রত্যেকবার টাকা গুনে দোকানদারের হাতে দিচ্ছিলেন। অনেক কষ্টে জমানো টাকা। খারাপ লাগছিল। কিন্তু সেই কন্ঠ বারবার মাথার মধ্যে অনুরনিত হয়। “আপনি দুই লাখ সেরা গ্রাহকের মধ্যে দ্বিতীয় হয়েছেন। ”
Cell Phones & Accessories করিম সাহেব সারাজীবনই পেছনে ছিলেন। কখনোই কোনকাজে সেরা ছিলেন না। আজ প্রথমবারের মত সেরাদের মধ্যে সেরা। নিজের অজান্তেই গর্বে বুক ভরে যায়। “পুরষ্কার হিসাবে আপনি পাবেন একটি নতুন মাইক্রোবাস অথবা ২২ লক্ষ টাকা নগদ। ” আর্থিকমূল্যেও বিরাট, অন্ততঃ করিম সাহেবের কাছে। চাকুরীতে সুযোগ পেয়েও তিনি নীতিভ্রষ্ট হন নাই। সারাজীবন সৎ থাকার চেষ্টা করেছেন। তাঁর সততার পুরষ্কার বোধহয় তিনি এভাবেই পাচ্ছেন। এসব ভাবতে ভাবতে তিনি অফিসে ফেরেন। ফুরফুরে মেজাজে সকলের সাথে অফিস ছাড়েন। ড্রইংরুমে টেলিভিশনের চ্যানেল ঘুরাতে থাকেন। পুরষ্কারের টাকা পাবার পর একটা নতুন টেলিভিশন কিনবেন। তাঁর কন্ঠে গুন গুন গান শুনে ছেলেটা মুখ ঘুরিয়ে মুচকি হাসে।
খোদেজা সবসময় কম কথার মানুষ। ৩০ বছরের বিবাহিত জীবনে স্বামীর কাছে সেভাবে কোন আবদার করেনি। স্বামীর সামর্থ ও সে জানে। বাসার ফ্রিজটা প্রায়ই নষ্ট হয়। টাকাটা পেলে নতুন ফ্রিজ কিনে এনে খোদেজাকে সারপ্রাইজ দেবেন। খোদেজা ফ্রিজ দেখে কেমন ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যাবে-করিম সাহেব ভাবতে থাকেন। তিনদিন কিছুতেই ফুরাতে চায় না। তিনদিন পরেই তিনি পুরস্কারের চিঠি হাতে পাবেন। চতুর্থদিন এসে যায়। আজ একটু তাড়াতাড়িই অফিসে ঢোকেন। অফিসেই চিঠি আসবে। এই বুঝি চিঠি আসে। সারাদিনই অস্থির করিম সাহেব। অফিস টাইম শেষ। হয়তোবা জ্যামে আটকে আছে কুরিয়ারের গাড়ি। অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। মাগরিবের আযান হয়। এবার করিম সাহেব বাসায় রওয়ানা হন। নির্ঘুম রাত কাটে। পরের দিন অফিসে গিয়েই সেই নম্বরে ফোন দেন। ফোন যাচ্ছে না। রিডায়াল করতে থাকেন। না, ফোন বন্ধ। সবগুলো নম্বরই বন্ধ।
করিম সাহেবের বুকটা কেঁপে ওঠে। পাগলের মত ফোন করতে থাকেন। কোন লাভ হয় না। বুকের ভিতর চিন চিনে ব্যথা অনুভব করতে থাকেন। চোখ খোলেন তিনি। বুঝতে পারেন হাসপাতালের বেডে। এদিক ওদিক তাকান। খোদেজাকে দেখতে পান। তাঁর হুঁশ ফিরেছে দেখে শাড়ীর আঁচলে চোখ মোছে। ছেলেমেয়ে ও আছে। কি হয়েছিল তা মনে করার চেষ্টা করেন। বুঝতে পারেন অফিসেই বেহুঁশ হয়ে পড়েছিলেন। সহকর্মীরা হাসপাতালে নিয়ে এসেছিল। “দ্রুত হাসপাতালে এসেছিলেন, এ যাত্রায় বেঁচে গেলেন”- ডাক্তারের হাসিমুখ দেখলেন। “স্যার, আচ্ছালামু আলাইকুম। আমি গ্রামীণ ফোন থেকে বলছি। যারা দীর্ঘদিন গ্রামীণ ফোন ব্যবহার করছেন এবং যাদের বিরুদ্ধে কখনো কোন অভিযোগ হয়নি, এমন দুই লাখ সেরা গ্রাহকের মধ্যে লটারী করা হয়েছে। সেরা দুই লাখ গ্রাহকের মধ্যে দ্বিতীয় ভাগ্যবান আপনি। আপনি পুরস্কার হিসাবে পাবেন একটি বারো সিটের নতুন মাইক্রোবাস কিংবা ২২ লাখ নগদ টাকা। পুরস্কারের চিঠি হাতে পাওয়ার আগে কাউকে একথা বলা যাবে না। আপনি দয়া করে এখনই ০১৭১৪৩২৭………..নম্বরে ফোন করুন। ”
ফোন ব্যাক করতেই অফিসিয়াল ফর্মালিটিজগুলো খুব সুন্দর ভাবে বোঝানো হয় করিম সাহেবকে। গাড়ীর কাগজপত্র রেডি এবং রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পাঁচ লাখ টাকা লাগবে। ছেলেটা এতো ভদ্র ও বিনয়ী, কোন সন্দেহ হয়নি তাঁর। নানা কথা ভাবতে ভাবতে সময় কেটে যায়। তিনদিন পর আবার অফিস যেতে শুরু করেন করিম সাহেব। গ্রামীণ ফোন অফিসে যোগাযোগ করে জানা যায় এরকম কোন লটারী কিংবা পুরস্কার প্রদানের বিষয় পুরোপুরি ভিত্তিহীন। করিম সাহেব প্রতারিত হয়েছেন। তাঁর সারাজীবনের সঞ্চয় এভাবে প্রতারকচক্র হাতিয়ে নিল!
কেন কারো সাথে শেয়ার করতে বারন করেছিল তা তিনি বুঝতে পারেন। নিজের গালে চড় মারতে ইচ্ছা করে তাঁর। পুরস্কার প্রাপ্তির খবর শেয়ার না করার কোন কারন ছিল না-এটি কেন তাঁর মাথায় আসেনি। গ্রাহক বাড়ানোর কৌশল হিসাবে ফোন কোম্পানী কোটি টাকার বিজ্ঞাপন প্রচার করে। কিন্তু এই ধরনের পুরস্কারের কথা জানালে তো গ্রাহক সংখ্যা অনেক বেড়ে যাওয়ার কথা। অথচ এই ব্যাপারে কোন বিজ্ঞাপন কিংবা বিজ্ঞপ্তিতো তাঁর চোখে পড়েনি। এসব চিন্তা কেন যে মনে আসে নি! এজীবনে আর কাউকে বিশ্বাস করবেন না। করিম সাহেব চরম ধাক্কা খেয়ে শিখলেন।
প্রতারনা ও প্রতারকের ইতিহাস অনেক পুরোনো। সময়ের সাথে সাথে শুধু ধরণ পাল্টায়। আমরা যদি একটু সতর্ক হই, চিন্তাভাবনায় যৌক্তিক হই, অন্তর থেকে লোভ পরিহার করি তা’হলে প্রতারিত হবার সম্ভাবনা একেবারেই কমে যাবে।
হাসপাতাল ছেড়েছেন কয়েকদিন। করিম সাহেব কেমন যেন মনমরা। শরীরের ওপর দিয়ে একটা ধকল গেছে। খোদেজা বেগম ভাবে সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে। সহকর্মীরা কুশলাদি জিজ্ঞাসা করেন। মলিন মুখে ভালো আছেন জবাব দেন। রাতে ঘুমাতে পারেন না। তিনি কি স্ত্রীকে সব খুলে বলবেন? জানাজানি হয়ে যাবে। মানুষ বোকা ভাববে। সবাই বিদ্রূপ করবে। স্বল্পভাষী খোদেজা তীর্যক মন্তব্য করবে। ছেলেমেয়ে মুখ টিপে হাসবে। তাদের বাবা কি বোকা।
করিম সাহেব সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। মাঝেমধ্যেই করিম সাহেব ঐসব নম্বরে সংযোগ পেতে চান। সব বারই ব্যর্থ, মোবাইল সংযোগ পাওয়া যায় না। এভাবে আরো এক সপ্তাহ কেটে যায়। রাতে এপাশ-ওপাশ করেন। গভীর রাতে মশারী থেকে বেরিয়ে জানালায় দাঁড়ান। গভীর রাতে ট্রাক আর কাভার্ড ভ্যানের শব্দ। খোদেজা বেগম সবই টের পান। স্বামী রাতে ঘুমান না। জিজ্ঞাসা করে সদুত্তর পায় না। বেশী প্রশ্ন করতে সাহসেও কুলায় না।
এমনিতে করিম সাহেব গোবেচারা টাইপের মানুষ। তবে বড্ড অভিমানী। ভেতরে ভেতরে করিম সাহেব ক্লান্ত। খোদেজাকে সব খুলে বলবেন। পঁচিশ বছর বিয়ে হয়েছে। স্ত্রীকে কোন কিছু গোপন করেন নি। খোদেজাই তাঁর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। দু’তিন দিন সংকল্প করেও বলা হয়ে ওঠেনা। আজ যে করেই হোক বলবেন। কখন বলা যায়। শুক্রবার, অফিস নাই। সারাদিন বাসায় থাকবে। আজই সুযোগ। ছেলেমেয়ে দু’জনই আজ বাসায়। ছোট্ট বাসা। সুযোগ হয় না। গভীর রাত।
সব শুনে খোদেজা নির্বাক। বিশ্বাস হতে চায় না। বিয়ের পর স্বামীকে দেবতা মনে করে এসেছে। কখনো লোভী হতে দেখেনি। শেষের দিকে করিম সাহেবের কন্ঠ ভারী হয়। পরম মমতায় স্বামীর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়ে। দু’জনেই চুপ করে থাকে। অনেকক্ষন পর খোদেজাই প্রথম কথা বলে। তার দুঃসম্পর্কের খালাতো ভাই পুলিশ। মোহাম্মদপুর থানায় আছে। পরেরদিন বাসা খুঁজে পেতে কষ্ট হয়। অনেকদিন যোগাযোগ নাই।
বশির দারোগা চুপচাপ শোনে। এতোটা বোকামী। বশিরের ভীষন রাগ হয়। তার ইচ্ছা হয় ভগ্নিপতির গালে ঠাস করে চড় মারে। খালাতো বোনের সাথে সম্পর্ক খুব শীতল। তাই খুব একটা কথা হয় না। শুষ্ক কন্ঠে বশির মিয়া বাঁকা কথা শোনায়। খোদেজা অপমান বোধ করে। লজ্জ্বায় মুখ তুলতে পারেন না। বশিরের কথা শুনে করিম সাহেবের মনে হয় তিনিই প্রতারিত নন। তিনি নিজেই প্রতারনা করেছেন, অপরাধী।
বশির মিয়ার কাছে এই গল্প পুরোনো। আগেও এরকম তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে। কোনটারই প্রতিকার দিতে পারে নাই। কি করবে তা বুঝে উঠতেই পারে নাই। মটর সাইকেল স্টার্ট দিয়ে বশির মিয়া থানায় যায়। মিনিট বিশেক পরে ফেরত আসে। আশার কথা শোনায়। ডিবি’র লোকেরা নাকি এরকম প্রতারক গ্যাঙ ধরতে পারে। বশির মিয়া টেলিফোনে তার ব্যাচমেটের সাথে কথা বলে। ব্যাচমেট সন্ধ্যার পর ডিবি অফিসে দেখা করতে বলে।
আবারো বিদ্রূপের মুখামুখি হতে হবে। করিম সাহেব মানসিক প্রস্তুতি নেন। বশির মিয়ার ব্যাচমেট করিম সাহেবকে নিয়ে তার বসের রুমে ঢুকে। এসি সাহেবের বয়স কম। করিম সাহেবকে বসতে ইঙ্গিত করেন। ইতস্ততঃ করে করিম সাহেব সামনের চেয়ারটাতে বসে পড়েন। বশির মিয়া আর তার ব্যাচমেট দাঁড়িয়ে থাকে। এসি সাহেব প্রশ্ন করে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পুরো কাহিনী শোনেন। প্রতারকের নম্বর এবং বিকাশ নম্বরগুলো নোট করেন। তিনি দেখবেন বলে করিম সাহেবকে বিদায় দেন। বশির মিয়ার মটর সাইকেলে করিম সাহেব বাসায় ফেরেন। এসি সাহেব তাকে কোন আশ্বাস দেন নি। করিম সাহেব কিছুটা হতাশ।
এসি সাহেব তার এডিসিকে সঙ্গে নিয়ে ডিসির রুমে যান। ডিসি স্যার অভিজ্ঞ মানুষ। সব শুনে কিছু নির্দেশনা দেন। এই ধরনের অভিযোগ আরো কয়েকটা এসেছে। একটা কিছু করা দরকার। মানুষকে প্রতারিত করছে। অনেক মানুষের সঞ্চয় হাতিয়ে নিচ্ছে। এসি সাহেব মাঠে নামেন। এডিসির সরাসরি তত্ত্বাবধানে তথ্য-প্রযুক্তি বিশ্লেষন করেন। বুঝতে পারেন প্রতারকচক্র অনেক বেশী ধূর্ত। মোবাইলগুলোর রেজিস্ট্রেশন সব ভূয়া। প্রতারকদের অবস্থান এলাকা চিহ্নিত করে ফেলেন। নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে যায় না এরা। স্থানীয় পুলিশের সহায়তা নিয়ে ধরে ফেলেন কয়েকজন প্রতারক।
এরা খুব একটা শিক্ষিত নয়। কথায় খুব স্মার্ট। জিজ্ঞাসাবাদে অজানা তথ্য বেরিয়ে আসে। বেশ কয়েক বছর আগে ঢাকার ফুটপাতে অনেক ধরনের ক্যানভাসার থাকতো। কেউ তাবিজ, কেউ হালুয়া কিংবা কেউ বই বিক্রি করতো। সম্ভাব্য ক্রেতা আকৃষ্ট করতে হতো। ক্যানভাসারের বাচনিক দক্ষতার উপর বেচাবিক্রি নির্ভর করতো। এটাই ছিল তাদের জীবিকা। আস্তে আস্তে টেপ রেকর্ডার এসে যায়। ক্যানভাসারের জায়গা দখল করে টেপরেকর্ডার। ক্যানভাসারদের ব্যবসা গুটিয়ে যায়।
ক্যানভাসারদের একটা বড় অংশ পেশা পরিবর্তন করে। ক্ষুদ্র একটা অংশ প্রতারনার পেশায় নেমে পড়ে। পূর্ব অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে টেলিফোনে কণ্ঠের জাদুতে মানুষকে কনভিন্স করে। প্রতারনার ফাঁদে ফেলে মানুষকে। পুরস্কারের প্রলোভনে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। ডিজিট দেখে অপেক্ষাকৃত পুরোনো নম্বরের গ্রাহক বেছে নয়। তারপর স্মার্ট কন্ঠে কল দিয়ে পুরস্কার প্রাপ্তির খবর দেয়। অন্যের সাথে শেয়ার করলে শিকার হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। তাই চাতুর্যের সাথে কারো সাথে শেয়ার করতে নিষেধ করে।
প্রচারেই প্রসার-ফোন কোম্পানীগুলো এই নীতিতে বিশ্বাস করে। পুরস্কার চালু করলে তা রেডিও-টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রচার করবে। নানারকম বিজ্ঞাপন বানাবে। বারবার প্রচার করে কান ঝালাপালা করে ফেলবে। পোষ্টার বিলবোর্ড বানাবে। পুরস্কারতো গোপনে দেওয়ার কথা নয়। ফোন কোম্পানীর হটলাইনগুলোতে ফোন করেও বিষয়টা যাচাই করা সম্ভব।
এই ধরনের ঘটনায় প্রতারককে খুঁজে বের করা খুব কঠিন কাজ। প্রতারক ধরা পড়লেও সাজা নিশ্চিত করা আরো কঠিন। টাকা ফেরত পাওয়া প্রায় অসম্ভব। প্রতারনা প্রাচীন পেশা। সতর্ক থাকুন। এধরনের অফার পেলে নিজে নিজে পর্যালাচনা করুন। অন্যদের সাথে আলোচনা করতে পারেন। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কোম্পানীর সাথে যোগাযোগ করুন। আপনার সচেতনতায় প্রতারক তার পেশা পরিবর্তনে বাধ্য হবে।

                            লেখক, পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান              মনিরুল ইসলাম

Sunday, July 23, 2017

সাবধান! ভয়ংকর প্রতারনার পর অশালীন ভিডিও দিয়ে কোটি টাকার ব্লাকমেইল!

একটি নামি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহ্‌ মো. মুজাহিদ। রাজধানীর অভিজাত পরিবারের গৃহশিক্ষক ছিল। এই সুযোগে ওই পরিবারের গৃহবধূকেই ধর্ষণ করে।
তবে শুধু ধর্ষণ করেই ক্ষান্ত হয়নি সে। ঘটনার ভিডিওচিত্র ধারণ করেছে। নিজেই মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে ধর্ষিতার স্বামীর কাছে। সেই মেসেজে লিখা ছিলো, ‘ভাই, আমি ভাবিকে বিদেশি ওষুধ খাইয়ে সেক্স করেছি। তিন ঘণ্টা ধরে সেক্স করেছি। দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন। না হলে তার কিডনি ড্যামেজ হয়ে যাবে’।
জানা গেছে, শাহ মো. মুজাহিদ নামের ওই যুবককে গত বছর আগস্টে নিজের দুই সন্তানের জন্য গৃহশিক্ষক নিয়োগ দিয়েছিলেন রাজধানীর ভাটারা এলাকার ব্যবসায়ী মামুন। অনেকটা নিজ সন্তানের মতো মনে করে ওই গৃহশিক্ষককে নিজ ফ্ল্যাটেই থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন তিনি। পরিবারের অন্য সদস্যদের মতোই অবস্থান ছিল মুজাহিদের। তবে মুজাহিদের চোখ পড়ে মামুনের অর্থবিত্তের দিকে।
পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গৃহকর্ত্রীর সরলতার সুযোগে কোমল পানীয়ের সঙ্গে নেশাজাতীয় যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট খাইয়ে গৃহকর্ত্রীকে তিনি ধর্ষণ করেন। গৃহকর্তা মামুন অসুস্থতার কারণে ওই সময় এ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার পর গৃহকর্তা মামুনকে অশ্লীল ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে এক কোটি টাকা দাবি করেন মুজাহিদ। বিষয়টি পুলিশ কিংবা র‌্যাবকে অবহিত করলে পরিণাম আরও খারাপ হবে বলে হুমকি দেন তিনি।
পরবর্তীতে সেটা বিশ্বাস করানোর জন্য আরো একটি মেসেজ পাঠিয়েছিল ওই গৃহশিক্ষক। তাতে লিখা- আপনার বাসার দারোয়ানের বেডের নিচেই একটি কালো রংয়ের পেনড্রাইভ রেখে আসছি। সেই পেনড্রাইভে ধর্ষণের ভিডিও আছে। পরে সেখান থেকে নির্যাতিতার স্বজনরা পেনড্রাইভটি সংগ্রহ করেন। সেই ভিডিও দেখে তারা আঁতকে ওঠেন। এরপরও মান-সম্মানের কথা ভেবে বিষয়টি চেপে যান তারাএমনকি বিশ্বাস করানোর জন্য পেনড্রাইভে করে তা পাঠিয়ে দিয়েছে কৌশলে। ভয়ঙ্কর সেই দৃশ্য দেখে আঁতকে ওঠেন স্বজনরা। এরপর ফের ঐ গৃহকর্তাকে এস এম এস করে বলেন, আমার বসেরা বলছে, ওই ভিডিও দিয়ে ব্লু-ফিল্ম তৈরি করতে। এখন আপনার টাকার ওপর সব নির্ভর করবে।’ গত বছর ৬ নভেম্বর ওপরের দুটি খুদেবার্তার বাইরেও অভিযুক্ত শাহ মো. মুজাহিদ অন্তত ১২টি খুদেবার্তা পাঠিয়েছিলেন ভুক্তভোগী । এ ঘটনায় ১১ জানুয়ারি রাজধানীর ভাটারা থানায় পর্নোগ্রাফি এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা মামলায় (নম্বর-৮)।
এরপর ধর্ষক মুজাহিদ ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে জিম্মি করতে চেষ্টা করে পরিবারটিকে । বিশাল চক্রের মাধ্যমে দাবি করে কোটি টাকা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজধানীর বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিভাগে মাস্টার্স পাস করা মুজাহিদ ৩৬তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। মামলার বাদী ব্যবসায়ী মামুন জানিয়েছেন , খোকন নামে এক ব্যক্তি গৃহশিক্ষক হিসেবে মুজাহিদের তথ্য দিয়েছিলেন। মুজাহিদ তখন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা করতেন। গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট থানার নরপতি শ্রীকুটা ফকিরবাড়ী।
পরে এ ব্যাপারে ২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ধর্ষিতার স্বামী। গৃহকর্ত্রীর স্বামী ও মামলার বাদী মামুন বলেন, একপর্যায়ে ভাটারা থানা পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি। চলতি বছর ১১ জানুয়ারি ভাটারা থানায় শাহ মো. মুজাহিদ, শাহ মো. মুশাহিদ ও মো. জুবায়েরকে আসামি করে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করলে পুলিশ প্রথম দুই আসামিকে গ্রেফতার করে। পুলিশ মুজাহিদের মোবাইল থেকে এসব ভিডিও উদ্ধার করে। এরমধ্যে মুজাহিদ জামিনে বেরিয়ে আসে।
ভুক্তভোগি পরিবারটির অভিযোগ, জামিনে বেরুবার পর ওই মামলা তুলে নিতেও হুমকি অব্যাহত রেখেছে মুজাহিদ গ্যাং। এ ব্যাপারে বাদী ভাটারা থানায় গত ২০শে জুন আরও একটি মামলাও দায়ের করেছেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, গত ১৮ই জুন তার মোবাইলে ফোন করে মামলা তুলে না নিলে জীবনে শেষ করে দেয়ার জন্য হুমকি দেয়। বাদী উল্লেখ করেন এই অবস্থায় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, শুধু ওই গৃহবধূই নয়, একাধিক নারীর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করে তাদের ব্লাকমেইল করেছে এই যুবক। এদিকে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন গাড়িচালক হাসান উল্লাহ। গত ২৫শে এপ্রিল সাক্ষী হিসেবে আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এতে তিনি ওই দিনের ঘটে যাওয়া ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেন। এছাড়া ১৬১ ধারায় ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন গৃহবধূ নিজেও।
ড্রাইভার তার জবানবন্দিতে বলেন, ওইদিন তিনি ডিউটি করার জন্য যান। সাহেব (ভিকটিমের স্বামী) তখন হাসপাতালে ছিলেন। বিকাল ৪টার দিকে লজিং মাস্টার মুজাহিদ সাহেবের ছেলেমেয়েকে নিয়ে বাসার নিচেই পার্কিংয়ে আসে। মুজাহিদ গাড়ি বের করতে বলে। সে (মুজাহিদ) জানায়, বাচ্চাদের নিয়ে তিনশ’ ফিট রাস্তার দিকে বেড়াতে যাবে। জবানবন্দিতে ড্রাইভার বলেন, তিনশ’ ফিট রাস্তার দিকে যখন যাচ্ছিলাম তখন দু’জন ব্যক্তি গাড়ি থামানোর জন্য সিগন্যাল দিলে মুজাহিদ আমাকে গাড়ি থামাতে বলে। মুজাহিদ ও নজরুল তাদের ভাই সম্বোধন করে গাড়িতে উঠতে বললে তারা গাড়িতে ওঠে। আমরা ইসাপুরার দিকে যাই। ইসাপুর লোকশূন্য এলাকা। ইসাপুরায় গিয়ে দেখি, ৫-৬ জন লোক দাঁড়িয়ে আছে। মুজাহিদ আমাকে সেখানে থামতে বলে। আমি দাঁড়ালে লোকগুলো দৌড়ে আসে। তারা আমাকে ও বাচ্চাদের জিম্মি করে। মুজাহিদ, ওয়ালিদ, নজরুল সেখান থেকে চলে যায়। আনুমানিক ২ ঘণ্টা পর জিম্মিকারীদের একজনের কাছে একটা ফোন কল আসে। তারা বলে, বস কাজ ওকে। তাদের কি ছেড়ে দেবো?
ড্রাইভার জানান, এরপর তারা আমাদের ছেড়ে দিলে জলদি বাচ্চাদের নিয়ে বাসায় চলে আসি। বাসায় এসে দেখি ম্যাডাম কাঁদছে। আমি ম্যাডামকে জিম্মি হওয়ার কথা জানাই। ম্যাডাম আরো কান্নাকাটি করে। আমি সাহেবের বাচ্চাদের বাসায় রেখে এবং গাড়ির চাবি দিয়ে বাসায় চলে যাই। পরে স্যারকে বিষয়টি অবগত করি।
ওইদিনে গৃহবধূর সঙ্গে ধর্ষক গৃহশিক্ষক যে ঘটনা ঘটিয়েছে তারও জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন আদালত। ১৬১ ধারায় দেয়া নির্যাতিতা ওই গৃহবধূ জানান, মুজাহিদ আমার ছেলে-মেয়েকে পড়াতো। ঘটনার দিন আমার স্বামী এ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ওইদিন মুজাহিদ আমার ছেলে-মেয়ে এবং ড্রাইভার হাসানকে নিয়ে তিনশ’ ফিট রোডে ঘুরতে যায়। যাওয়ার ৪০-৪৫ মিনিট পর মুজাহিদ বাসায় একা ফিরে আসে। তখন তার হাতে একটি কোল্ড ড্রিংকস ছিল। এটা আমার হাতে দিয়ে খেতে বললে সেটা খাই। খাওয়ার পর মাতালের মতো হয়ে যাই। তখন মুজাহিদ আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং মোবাইলে ভিডিও করে। সেটা দেখিয়ে আমাকে বলে যে, টাকা না দিলে আমার ছেলে- মেয়েকে ছাড়বে না এবং ভিডিও স্বামীকে দেখানোর হুমকি দেয়।
জবানবন্দিতে ভিকটিম বলেন, আমি মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে লকারের চাবি দিয়ে দিই। পরে মুজাহিদ লকার থেকে টাকা, ৫টি চেক নিয়ে নেয় যাতে আমাকে স্বাক্ষর করায়। তার কাছে থাকা তিনটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়। সে জানায়, আমি যদি আরো টাকা না দিই, তাহলে ভিডিও আমার স্বামীকে দেখিয়ে দেবে। এ ঘটনা স্বামীকে বলে দিই। ঘটনা শোনার পর আমার স্বামী মুজাহিদকে ফোন করে। মুজাহিদ আমার স্বামীকে বলে, যদি তাকে এক কোটি টাকা না দেয়া হয় তাহলে তার স্ত্রীর নগ্ন ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবে।
  • গৃহবধূ বলেন, আমার স্বামী মুশাহিদ ও জুবায়েরের নিকট আপসের জন্য ফোন করে। ওরাও আমার স্বামীকে ব্লাকমেইল করতে চেষ্টা করে। এরপর আমার স্বামী কোনো উপায় না পেয়ে থানায় গিয়ে মামলা করে। ভিকটিমের এই জবানবন্দি রেকর্ড করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট প্রণব কুমার হুই।
গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মোস্তাক আহমেদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, মামলার তদন্তে একজনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তিনি জানান, তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে, আসামি মুজাহিদ একটি পর্নোগ্রাফি গ্যাংয়ের সদস্য। এর আগেও এই গ্রুপের সদস্যরা অনেক নারীর সরলতার সুযোগ নিয়ে তাদের ব্ল্যাকমেইল করে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছে। অশ্লীল এসব দৃশ্যের ভিডিও ধারণ করে পর্নো ছবিও তৈরি করেছে তারা। এই গ্রুপের একজন সক্রিয় সদস্য তার সহোদর মুশাহিদ।
গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই পুলিশের কাছে এসব স্বীকার করেছেন মুজাহিদ। তিন দফায় আট দিনের রিমান্ডে আদায় করা তথ্যের ভিত্তিতে মুজাহিদের গ্রামের বাড়ি থেকে একটি মুঠোফোন, একটি পেনড্রাইভ ও একটি মেমোরি কার্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ। মেমোরি কার্ডে অপর একজন নারীর সঙ্গে অভিযুক্ত মুজাহিদের সেক্স ভিডিও পাওয়া গেছে। উদ্ধার আলামতগুলো এরই মধ্যে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের ফরেনসিক ল্যাবরেটরি থেকে পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষার প্রতিবেদনেও ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।

ফল খারাপের পেছনে কী, জানালেন শিক্ষামন্ত্রী

চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এ বছর পরীক্ষায় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। ফল গতবারের চেয়ে খারাপ হয়েছে।
আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ফলের অনুলিপি তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এ সময় ফল কেন খারাপ হয়েছে, তার ব্যাখ্যা দেন মন্ত্রী।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গতবার এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৭৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। এবারের পাসের হার ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। দেখা যাচ্ছে, এবার ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ কম পাস করেছে।

নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘এবার পাস কম করায় আমরা বিস্মিত হইনি। পরীক্ষার খাতা ভালোভাবে মূল্যায়ন করার কারণেই এ ফল হয়েছে। গত মাধ্যমিক (এসএসসি) পরীক্ষায়ও একই ঘটনা ঘটেছিল। এসএসসিতে গতবারের চেয়ে ৮ শতাংশ পাস করেছে। সে ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে এইচএসসিতে কম খারাপ হয়েছে; বরং এটা সাফল্য।’

‘আমরা একটি কমিটি করে দিয়েছি, যার অধীনে পরীক্ষার খাতাগুলো বিশেষভাবে মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে। এখানে ঢালাওভাবে খাতা মূল্যায়নের কোনো সুযোগ নেই। প্রথমে আমরা প্রধান পরীক্ষককে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। পরে তিনি অন্যদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। খাতা দেখার বিশেষ মূল্যায়নের কারণেই ফলের এই পার্থক্য হচ্ছে। এতে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই, এটা আমাদের সাফল্য। ভবিষ্যতে এটা ধীরে ধীরে একটা স্থির অবস্থায় এসে পড়বে।’

শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, ‘খাতা দেখার এই পদ্ধতিতে সবাই একমত হয়েছে। সংবাদমাধ্যমও এ ব্যাপারে আমাদের সাহায্য করেছে।’

এবার ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা ভালো করেছে। ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এবার ২ দশমিক ৮২ ভাগ বেশি পাস করেছে।

মাদ্রাসা, কারিগরিসহ ১০টি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় এবার পরীক্ষায় অংশ নেয় আট হাজার ৮৬৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৬ পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছে ছয় লাখ ৪৪ হাজার ৯৪২ জন।

এবার মোট জিপিএ ৫ পেয়েছে ৩৩ হাজার ২৪২ জন। এবার গতবারের চেয়ে প্রায় ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী কম পাস করেছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল তুলে ধরবেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

ফল জানতে শিক্ষার্থীদের অপেক্ষা করতে হবে শিক্ষামন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন পর্যন্ত। এর পরই আনুষ্ঠানিকভাবে নির্ধারিত ওয়েবসাইট ও নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ফল জানতে পারবে শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষামন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের পর এনটিভি অনলাইনের www.ntvbd.com/result/hsc-result-2017/ লিংকের মাধ্যমেও পরীক্ষার ফল জানা যাবে।

গত ২ এপ্রিল সারা দেশে একযোগে শুরু হয় এই পরীক্ষা। লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় ১৫ মে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, এ বছর মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ছয় লাখ ৩৫ হাজার ৬৯৭ জন। আর ছাত্রী পাঁচ লাখ ৪৭ হাজার ৯৮৯ জন। সারা দেশে মোট দুই হাজার ৪৯৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

Thursday, July 20, 2017

‘V 4 BNP’ তারেক রহমানের গাড়ির ব্যতিক্রমী এই নাম্বার প্লেটের ‘রহস্য’ জানেন কী ?

বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান বেশ কয়েক বছর ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। সেখান থেকেই তিনি বিএনপির রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
লন্ডন বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জে সেদিন হাজারো নেতাকর্মীর ভীর। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ভিআইপি লাউঞ্জ দিয়ে আসছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। মা খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে আগে থেকেই অপেক্ষমান ছেলে তারেক রহমান এগিয়ে এসে জড়িয়ে ধরেন মা’কে। এসময় এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারনা হয়। দুজনে কোলাকুলি শেষে  সেখানে লন্ডন বিএনপির উপস্থিত নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়াকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
এরপর, হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে তারেক রহমানের ব্যক্তিগত লেক্সাস গাড়িতে করে লন্ডনে যাত্রা শুরু করেন খালেদা জিয়া। তারেক রহমান নিজে গাড়ি চালিয়ে খালেদা জিয়াকে বিমানবন্দর থেকে বাসায় নিয়ে যান।
সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে তারেক রহমানের  গাড়ির নাম্বার প্লেটে  V 4 BNP লেখাটি এদিন নজর কাড়ে অনেকের। বুঝতে বাকি থাকেনা এখানে ‘ভি’ শব্দটি বিজয় সুচক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ ‘বিএনপি’র জন্য বিজয়’ এমন কিছুই নির্দেশ করছে গাড়ির নাম্বার প্লেটে।
অথচ, সাধারণত গাড়ির নাম্বার প্লেট এমন হবার কথা নয়! তাহলে ট্রাফিক আইন না মেনেই কি  এমন করে লিখা? এমন নানা প্রশ্নে আর আলোচনায় সরগরম হয় সামাজিক মাধ্যম।
ঘটনার ‘রহস্য’ আসলে গভীর কিছু নয় উল্লেখ করে এ সম্পর্কিত কৌতুহল নিবারনে বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা জানালেন,  মুলতঃ V 4 BNP এটি একটি প্রাইভেট নম্বর। লন্ডনে এমন নাম্বার প্লেট আসলে ‘দুর্লভ নয়’। খুব কম খরচেই ব্রিটিশ সরকারের ‘চালক ও যান আইনে’ এমন পছন্দনীয় নাম্বার প্লেটের জন্য আবেদন করা যায়। সেখানে আবেদনের পর কতৃপক্ষ যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে প্রত্যাশিত নাম্বার প্লেটের অনুমোদন দিয়ে থাকেন।
সুত্র আরও জানায়, সিম্বলিক অর্থে এমন ব্যতিক্রমী প্লেটটি তারেক রহমান মুলত দলের নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করাতেই কিনেছেন। আর এই নাম্বার প্লেটটির মুল্য ৯৩৭ ইউরো বলেও জানান সুত্রটি ।

Wednesday, July 19, 2017

শাকিব খানের বিরুদ্ধে আইনের সহায়তা নিবে হবিগঞ্জের আক্তার!

ঢাকাইয়া ছবির কিং খান (শাকিব) মনে করে এক যুবকের মোবাইলে প্রতদিন ফোন আসছে। যতবারই বলছেন না আমি শাকিব খান নই, ততবারই শুনতে হচ্ছে ‘প্লিজ ভাই একমিনিট কথা বলবো। ‘ রাতে ঘুমাতে গেছি, ফোন আসছে, ‘শাকিব ভাই আমি আপনার ভক্ত, একমিনিট  কথা বলতে চাই’ থাকি যখন তখনও ফোন আসে। বাধ্য হয়ে ফোন বন্ধ করে রাখতে হচ্ছে। অথচ প্রয়োজনীয় ফোন বন্ধ রাখলেও বিপদ। ‘শাকিব খান’ ঝামেলা থেকে মুক্তি চান হবিগঞ্জের আকতার মুন্না। এজন্য সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সহায়তাও চেয়েছেন তিনি।
ঘটনাটা আসলে কী?
গত রোজার ঈদে বুলবুল বিশ্বাস পরিচালিত রাজনীতি ছবিটি মুক্তি। এই ছবিতে শাকিব খান ও বিশ্বাস অভিনয় করেছেন। সমস্যা সেখানেও না। সমস্যা হলো শাকিব খান সিনেমার সংলাপে একজনকে একটি ফোন দিয়ে নম্বর দিয়ে বলেন এটা আমার নম্বর। ফোন দিও। সচরাচর চিত্রনাট্য যিনি লিখেন, তিনি হয় পূর্ণ নম্বর লিখেন না, নাহলে বানিয়ে একটা নম্বর লিখে ফেলেন। শাকিব খান যে নম্বরটা দেন ছবিতে সেটাও বানানো, কিন্তু কাকতালীয়ভাবে হবিগঞ্জের আক্তারের ফোন নম্বরের সাথে মিলে যায়। যার ফলে শাকিব খান মনে করে তার নিকট একের পর ফোন আসতে থেকে। এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে।
আক্তার যা বলছেন
আকতার সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে লিখেছেন, ‘বাংলা মুভি: রাজনীতি, পরিচালক: বুলবুল বিশ্বাস, প্রযোজক: আশফাক আহমেদ, অভিনেতা: শাকিব খান। এদের ৩ জনের পূর্ণ নাম ঠিকানা কেউ আমাকে সংগ্রহ করে দিতে পারবেন এই তিন জনের বিরুদ্ধে আমি আইনের সহায়তা নিতে চাচ্ছি।
এ বিষয়ে মুন্নার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সিনেমা যে নম্বরটা দেয়া হয়েছে সেটা আমার নম্বর না। সেটা কেন ব্যবহার করা হলো? এখন আমি ঝামেলার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি এর দায় কে নেবে? এখন চব্বিশ ঘণ্টা আমার মোবাইলে কল আসে। সুস্থভাবে কোনো কাজ আমি করতে পারছি না। এ সময় তিনি রাজনীতি সিনেমার পরিচালকের নামে আইনি ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, রাজনীতি সিনেমায় ‘ও আকাশ বলে দে আমায়…’ গানটির পরপরই আকতার মুন্নার ব্যক্তিগত নাম্বার ব্যবহার করে নায়ক শাকিব খান বলেন, এটা আমার নাম্বার এই নাম্বারে ফোন দিয়ো। ‘