নষ্ট
মোবাইল ফোনের নানারকম ক্ষতিকর রাসায়নিক যাতে পরিবেশ ও মানবস্বাস্থ্যের
জন্য হুমকি না হয় সেজন্য সঠিক পদ্ধতিতে সেগুলো রিসাইক্লিং করার উদ্যোগ
নিয়েছে গ্রামীণফোন।
সোমবার বিশ্ব পরিবেশ দিবসে রাজধানীর ফার্মগেটে গ্রামীণফোন সেন্টারে
‘মোবাইল হ্যান্ডসেট রিসাইক্লিং’ প্রচারণা কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা
হয়।
এসব বাতিল ডিভাইসের মধ্যে পুনর্ব্যবহার উপযোগী সকল উপকরণসহ সম্ভাব্য
ক্ষতিকর উপাদান সঠিকভাবে প্রক্রিয়াকরণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশের শীর্ষ
মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠান। এই পুরো প্রক্রিয়ায় আইএসও ১৪০০০, ওএসএইচএএস
১৮০০০ এবং ‘আন্তর্জাতিক স্ট্যাডার্ড’ বা আর ২ অনুসরণ করা হবে।
এজন্য গ্রামীণফোন সেন্টারগুলোতে নষ্ট-বাতিল হ্যান্ডসেট সংগ্রহ করতে
বিশেষ বাক্স রাখা হবে। কর্মসূচি বাস্তবায়নে শুরু হয়েছে চারণা। এ প্রচারণায়
বাতিল মোবাইল হ্যান্ডসেট নিকটস্থ গ্রামীণফোন সেন্টারে ড্রপবক্সে জমা দেয়ার
আহ্বান জানানো হবে।
সোমবার বিশ্ব পরিবেশ দিবসে রাজধানীর ফার্মগেটে গ্রামীণফোন সেন্টারে
‘মোবাইল হ্যান্ডসেট রিসাইক্লিং’ প্রচারণা কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন
করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. রাইসুল আলম মন্ডল। তিনি বলেন,
গ্রামীণফোনের হ্যান্ডসেট রিসাইক্লিংয়ের উদ্যোগ পরিবেশ সংরক্ষণে নতুন মাত্রা
যোগ করেছে। বিটিআরসিকে অনুরোধ করবো যে তারা যেন সংশ্লিষ্ট অন্যদেরকেও এই
উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত করে।
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী মাইকেল ফলি বলেন, পরিবেশগত দৃষ্টিকোণ থেকে
অব্যবহৃত ও বাতিল ফোন মাটিতে মিশে যেতে না দিয়ে নিরাপদ, সুরক্ষিত ও নৈতিক
উপায়ে রিসাইক্লিং করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গ্রামীণফোন জানায়, মোবাইল হ্যান্ডসেটে পারদ, ক্যাডমিয়াম, সীসা,
বেরিলিয়াম এবং অগ্নি প্রতিরোধকসহ একাধিক ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান রয়েছে।
এসব হ্যান্ডসেট সঠিকভাবে ধ্বংস করা না হলে কিংবা মাটিতে মিশে গেলে মোবাইল
হ্যান্ডসেট থেকে নির্গত ক্ষতিকর উপাদান মাটি ও খাবার পানি দূষিত করতে পারে।
একটি মোবাইল ফোনে ব্যবহৃত ক্যাডমিয়ামই ছয় হাজার লিটার পানি দূষণের জন্য
যথেষ্ট। মোবাইল ফোন নির্মাণে ব্যবহৃত অগ্নি প্রতিরোধক উপাদান, সীসা ও
বেরিলিয়াম ক্যান্সার, যকৃত এবং স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতিসহ অনেক ঝুঁকিপূর্ণ
রোগের কারণ হতে পারে। মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে ও সার্কিট বোর্ডে ব্যবহৃত পারদ
মস্তিষ্ক ও কিডনির ক্ষতি করতে পারে। এক চা চামচ পরিমাণ পারদ বিশ একরের একটি
লেকের পানি আজীবনের জন্য দূষিত করে ফেলতে পারে।
গ্রামীণফোনের বিবৃতি অনুযায়ী, রিসাইক্লিং করার জন্য জমা দেয়া হ্যান্ডসেট
কোন অবস্থাতেই বিক্রি করা হবে না কিংবা পুনরায় ব্যবহার করা হবে না।
হ্যান্ডসেটগুলো মাটি চাপা না দিয়ে বরং সঠিক উপায়ে ভেঙ্গে ফেলা হবে এবং
প্রাপ্ত উপাদানগুলো নতুন পণ্য তৈরিতে ব্যবহার করা হবে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ছিলেন বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ। আরও উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোনের চিফ
করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মাহমুদ হোসেন।
No comments:
Post a Comment