নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় জাতীয় দলের ক্রিকেটার আরাফাত সানির জামিন ৬ জুলাই পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।
বুধবার
 ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কামরুল হাসান মোল্লা এ আদেশ দেন। 
আদেশে জামিন আগামী ৬ জুলাই পর্যন্ত জামিন বৃদ্ধি করেন এবং মামলাটি সমঝোতা 
করার জন্য পরামর্শ দেন। এ মামলায় আজ পর্যন্ত জামিনে ছিলেন সানি।
এদিন
 নাসরিন সুলতানা আদালতে সানির জামিনের বিরোধিতা করে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন,
 ‘আরাফাত সানী জামিন নিয়ে যাওয়ার পর থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছে না। তাকে
 ফোন দিলে সে ফোন রিসিভ করে না। এরপর একদিন আমি তার বাসায় গেলে তার মা 
নার্গিস আক্তার আমাকে মারধর করেন। সে আমার সঙ্গে একটি দিনও কাটাচ্ছে না।’
নাসরিন
 সুলতানা আরো বলেন, ‘আরাফাত সানীর আগে বিয়ে ছিল, সেটা আমি জানতাম না। 
সেখানে নাকি তার একটি বাচ্চাও আছে। তার সঙ্গে যখন আমি দেশের বাইরে ঘুরতে 
যাই তখন তার পাসপোর্টে অবিবাহিত লেখা ছিল। সে আমাকে ধোঁকা দিয়েছে। আমি তার
 জামিন নামঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।’
একই সঙ্গে নাসরিন সানীর প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে তাকে ঘরে তোলার দাবিও জানান নাসরিন, যিনি নিজেকে দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করছেন।
সানীর পক্ষে জামিন শুনানি করেন কাজী নজিবুল্লাহ হিরু ও এম জুয়েল আহম্মদ।
সানীর
 আইনজীবীরা বলেন, ‘আরাফাত সানীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য নয়। 
তাছাড়া আরাফাত সানী বর্তমানে লীগে খেলছেন। সেখানে তিনি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ 
উইকেট নিয়ে রেকর্ড গড়েছেন। এ অবস্থায় তার জামিন মঞ্জুর প্রয়োজন।’
সানীর
 আইনজীবীরা আরো বলেন, ‘তার (নাসরিন সুলতানা) সঙ্গে সংসার হোক আমরা সেটাই 
চাচ্ছি। এজন্য তাকে আলাদা ফ্ল্যাট ভাড়া করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি 
সেখানে থাকছেন না। তিনি সানীর প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিতে বলছেন। কিন্তু এটা
 সম্ভব না। কারণ নাসরিন সুলতানা আরাফাত সানীর প্রথম স্ত্রীর কথা জেনে-শুনেই
 তাকে বিয়ে করেছেন। এখন সানীর প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিলে তিনিও মামলা 
করবেন। আরাফাত সানী এখন দুই স্ত্রীকেই রাখতে চাচ্ছেন।’
শুনানি শেষে আদালত আরাফাত সানিকে আগামি ৬ জুলাই পর্যন্ত বাদিনীর সঙ্গে আপোসের শর্তে জামিন মঞ্জুর করেন।
এর
 আগে গত ৯ মার্চ একই আদালত সানিকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন। 
এরপর ১৫ মে ৭ জুন পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার চার 
নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন সানির স্ত্রী 
নাসরিন সুলতানা।
মামলায় বলা হয়, সাত বছর
 আগে পরিচয়ের সূত্র ধরে উভয়ের ঘনিষ্ঠতা হয়। একপর্যায়ে তারা দুজন দুজনকে 
ভালবাসেন। ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর অভিভাবকদের না জানিয়ে তারা বিয়ে করেন। 
কিন্তু বিয়ের তিন বছরেও সানি দুই পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে নাসরিন 
সুলতানাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘরে তুলে নেননি। বারবার এ বিষয়ে চাপ দিলেও তিনি 
কালক্ষেপণ করেন।
এরপর আরাফাত সানির 
বিরুদ্ধে নাসরিন সুলতানা নারী নির্যাতনের মামলা ছাড়াও যৌতুক আইনে একটি 
মামলা এবং তথ্য-প্রযুক্তি আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় গত ২২
 মার্চ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। আরাফাত সানির সঙ্গে নাসরিন 
সুলতানার বিয়ে হয়েছিল চার্জশিটে উল্লেখ করেন তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর 
থানার এসআই মো. ইয়াহিয়া।

 
No comments:
Post a Comment